লাইলাতুল ক্বদর তথা মহিমান্বিত রজনীতে মহা বিশ্বের মহা বিস্ময় পবিত্র কুরআনুল কারীম লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানের বাইতুল ইয্যাহ নামক স্হানে অবতীর্ণ হয়। সেখান থেকে সুদীর্ঘ ২৩ বৎসরে মহানবী (স)’র নিকট অবতীর্ণ এই পবিত্রতম কিতাব অবিকৃত অবস্থায় মানব সভ্যতায় আলোর পথের দিশা হিসেবে স্বীকৃত। আর কিয়ামত পর্যন্ত এটি অবিকৃত থাকবে। এই মর্মে মহান বারী তায়ালা বলেন, আর এই কিতাব আমি নাযিল করেছি এবং এর সংরক্ষণের দায়িত্ব আমিই গ্রহন করেছি। (সূরা আল হিজর, আয়াত ৯)
এই রাতের মহিমা বর্ণনায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ঘোষণা, লাইলাতুল ক্বদর হলো হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেয়। (সূরা ক্বদর, আয়াত ৩) ইবনে জারীর (র) বর্ণনা করেন, একদা মহানবী (স) সাহাবীগণের সম্মুখে বণী ইসরাঈলের সামাউন নামক এক ব্যক্তির আলোচনা করছিলেন। যিনি সারা রাত ইবাদত এবং সারা দিন ধর্মযুদ্ধ করে এক হাজার বৎসর জিন্দেগী অতিবাহিত করেন। এসব শুনে সাহাবীগণ বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (স)! তাহলে তো হাশরের দিন তাদের অবস্থান আমাদের থেকে অনেক উন্নত হবে। এই প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ সূরা ক্বদর নাযিল করে জানিয়ে দেন যে, লাইলাতুল ক্বদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। অর্থাৎ লাইলাতুল ক্বদরের দ্বারা উম্মতে মুহাম্মাদী (স)’র ইজ্জত সম্মানকে বুলন্দ করেছেন প্রিয় নবী (স)’র সদাকায়।
মহানবী (স) লাইলাতুল ক্বদর তালাশের ব্যপারে নির্দেশ দিয়ে বলেন, তোমার রমাদ্বানের শেষ দশ দিনের বিজোড় রাতে ক্বদর তালাশ করো। (বুখারী)
স্পষ্ট ভাবে বুঝা গেল যে, ২১,২৩,২৫,২৭,২৯ ই রমাদ্বান অর্থাৎ পাঁচটি রাতের যেকোন এক রাতে হতে পারে লাইলাতুল ক্বদর।
মহান আল্লাহ চাইলে নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দিতে পারতেন কিন্তু তিনি জানান নি কারন এমনও হতে পারে তিনি চাইলে প্রত্যেক বিজোড় রাতকে একেকটি করে ক্বদর আমাদেরকে দান করতে পারেন। (ইনশাআল্লাহ)
আয়েশা (রা)বর্ণনা করেন, যখন রমাদ্বানের শেষ দশক আসত তখন রাসূলে পাঁক (স) ইবাদতের জন্য শক্ত করে তাঁর লুঙ্গি বেঁধে ফেলতেন অর্থাৎ ইবাদতে বেশী নিমগ্ন হতেন। তিনি সারা রাত ইবাদত করতেন এবং পরিবার পরিজনকে ও জাগ্রত রাখতেন।(বুখারী ও মুসলিম)
চলুন আমরাও ইবাদতের মাধ্যমে লাইলাতুল ক্বদর তালাশ করে দোজাহানে কামিয়াবী হাসিল করি।
আব্দুল্লাহ আল-মামুন, ধর্মীয় শিক্ষক
চরকালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, মতলব উত্তর, চাঁদপুর
Leave a Reply