তাকওয়া শব্দটির আভিধানিক অর্থ হলো আল্লাহভীতি, পরহেজগারি ইত্যাদি। পরিভাষায় বলা যায়, মহান আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে মুক্ত হয়ে সত্য, ন্যায় ও সুন্দরের পথ তথা কুরআন-সুন্নাহর পথে মৃত্যু পর্যন্ত টিকে থাকার দৃঢ় প্রত্যয়ী হওয়ায় সর্বান্তকরণ প্রচেষ্টার নাম তাকওয়া।
কুরআনুল কারীমে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই সম্মানিত যার তাকওয়া সবচেয়ে বেশী” ( সূরা হুজুরাত ১৩ আয়াত)। এখানে লক্ষনীয়, কে কত টাকার মালিক? কে কত শক্তিশালী? কে কত মোটা-তাজা? এসব বিষয় বিবেচনায় আনা হয়নি। বরং মহান আল্লাহকে কে কত ভয়পান সেটাই মুখ্য।
কারণ, আল্লাহকে যে যত ভালবাসবেন সে তত পাপ মুক্ত থাকবেন আর যত পাপ মুক্ত থাকবেন সে তত নেকের মাধ্যমে সম্মানিত হবেন।
আর রমাদ্বান মাস তাকওয়া অর্জনের মাস। কুরআনুল কারীমে আরো ইরশাদ হয়েছে, হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমনি ভাবে ফরজ করা হয়েছিল পূর্ববর্তী জাতীদের উপর, যেন তোমরা (এই রোজার মাধ্যমে) তাকওয়া অর্জন করতে পার। (সূরা আল বাকারা ১৮৩ আয়াত)
এবার বুঝে নেওয়া দরকার যে, কিভাবে রোজায় তাকওয়া অর্জন হয়? রোজাদার তৃষ্ণায় কাতর হয়ে পরে কিন্তু পানি পান করেন না। ক্ষুধার জ্বালায় প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত কিন্তু কিছুই খায় না। ত্যাজদীপ্ত যৌবন, স্ত্রী পাশে থাকা সত্বেও আল্লাহর হুকুম ভঙ্গ করে যৌনতাকে প্রশ্রয় দেয়না। সাহরির সময় শেষ, তাই ঘুম থেকে উঠে কিছু না খেয়েই রোজার নিয়ত করে ফেলেছে। রকমারি ইফতার টেবিলে সাজানো কিন্তু সময়ের এক সেকেন্ড আগেও রোজাদার কিছুই মুখে নিচ্ছেন না।
প্রশ্ন হলোঃ কেন এবং কিসের জন্য এত কিছুকে এড়িয়ে যাচ্ছেন একজন রোজাদার? কাকে ভয় পাচ্ছেন একজন রোজাদার? এতগুলো প্রশ্নের সংশয়হীন একটাই উত্তর, “মহান আল্লাহর ভয়” যা রোজাদারকে সংযমী করে।
আল্লাহর হাবীব (দ) ইরশাদ করেন, রোজা হলো ঢাল স্বরূপ। (বুখারী ও মুসলিম) অর্থাৎ ঢাল যেমনি ভাবে তীর ও তরবারির আঘাত থেকে রক্ষা করে, রোজাও তেমনি সমস্ত অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে রক্ষা করে।
প্রিয় মুসলিম ভাইদের প্রতি আকুল আবেদন, আসুন আমরা সিয়াম সাধনার দ্বারা পরহেজগারি অর্জনে ব্রতী হই। অন্যকে সিয়াম সাধনায় উৎসাহিত করি।
(অমা আলাইনা ইল্লাল বালাগ)
আব্দুল্লাহ আল মামুন
ধর্মীয় শিক্ষক, চরকালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
মতলব উত্তর,চাঁদপুর।