মো. নাছির উদ্দীন: ২০১৯ বিদায় নিয়েছে দুই সপ্তাহ হলো। বিদায়ী বছরটায় হিরো থেকে জিরো এবং উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গেছে বাংলাদেশ তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। বিশেষ করে ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপটা স্বপ্নের মতো কাটিয়েছেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে ছিলেন ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। টুর্নামেন্টের ৮ ম্যাচে ৫ ফিফটি ও ২ সেঞ্চুরিতে প্রায় ৮৭ গড়ে করেছেন ৬০৬ রান। শুধু একটি ম্যাচে পঞ্চাশ (৪১) পেরুতে পারেননি সাকিব আল হাসান।
তারপরেও বিশ্বকাপের মতো মেগা আসরে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। বিশ্বকাপের অসাধারণ পারফরম্যান্সের সুবাদেই উইজডেনসহ বেশ কিছু ওয়েবসাইটের ২০১৯ সালের বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে ছিলেন সাকিব। বিশ্বকাপে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের কল্যাণে এবার ২০১৯ সালের বর্ষসেরা ওয়ানডে ব্যাটিং ইনিংসের জন্যও মনোনীত হয়েছেন সাকিব আল হাসান।
জনপ্রিয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো বাছাই করেছে ২০১৯ সালের সেরা ওয়ানডে ইনিংসগুলো। সেখানে সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখা হয়েছে ১০টি ইনিংস। এই ১০ ইনিংসের ৯টিই আবার বিশ্বকাপের আসর থেকে মনোনীত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাকিব আল হাসানের করা ১২৪ রানের দ্যূতি ছড়ানো ইনিংসটিও।
মনোনীত প্রতিটি ইনিংসের ব্যাপারেই নিজেদের মূল্যায়নও জানিয়েছে ক্রিকইনফো। সাকিবের সেই ইনিংস সম্পর্কে তারা লিখেছে, ‘তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে রান তাড়া করে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয় এনে দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। পুরো ইনিংস খেলার সময় ডি/এল মেথডের ব্যাপারেও চিন্তা করতে হয়েছে।’
‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা তার পাজর বরাবর বাউন্সার দিয়েছিলো কিন্তু সাকিব অসামান্য দক্ষতায় সেগুলোর পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন। টন্টনের ছোট মাঠ, আন্দ্রে রাসেলের অফফর্ম এবং খানিক ভাগ্যের সহায়তায় লিটন দাসকে নিয়ে ১৮৯ রানের জুটি গড়েছিলেন সাকিব। নিজের পুরো ইনিংসে মনোমুগ্ধকর কিছু বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার। আবার কিছু শটে অল্পের জন্য বেঁচেও গিয়েছিলেন।’
আবার বছরের শেষ বেলায় এসে এই সাকিব আল হাসানই হিরো থেকে জিরোতে পরিনত হন। জুয়াড়িদের কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়ে তা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) না জানানোয় সব ধরনের ক্রিকেট থেকে সাকিব আল হাসানকে এক বছরের নির্বাসনে পাঠায় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি। এছাড়াও দেশীয় ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রতিবাদে সাকিবের নেতৃত্বে আন্দোলনে নামে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এই আন্দোলনে সাকিবের ভূমিকাও প্রশ্নাতীত।
ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা ওয়ানডে ব্যাটিংয়ে মনোনীত ইনিংসগুলো
১.নাথান কাউল্টার নিল (অস্ট্রেলিয়া) – ৯২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বিশ্বকাপ
২. শিখর ধাওয়ান (ভারত) – ১১৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া, বিশ্বকাপ
৩. রোহিত শর্মা (ভারত) – ১৪০ বনাম পাকিস্তান, বিশ্বকাপ
৪. সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ) – ১২৪* বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বিশ্বকাপ
৫. শেমরন হেটমায়ার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) – ১৩৯ বনাম ভারত, দ্বিপাক্ষিক সিরিজ
৬. কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড) – ১০৬* বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, বিশ্বকাপ
৭. কার্লস ব্রাথওয়েট (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) – ১০১ বনাম নিউজিল্যান্ড, বিশ্বকাপ
৮. বাবর আজম (পাকিস্তান) – ১০১* বনাম নিউজিল্যান্ড, বিশ্বকাপ
৯.জনি বেয়ারস্টো (ইংল্যান্ড) – ১১১ বনাম ভারত, বিশ্বকাপ
১০. বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড) – ৮৪ বনাম নিউজিল্যান্ড, বিশ্বকাপ ফাইনাল
Leave a Reply