ঘুম বা নিদ্রা হচ্ছে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর দৈনন্দিন কর্মকান্ডের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যখন সচেতন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া স্তিমিত থাকে। নিষ্ক্রিয় জাগ্রত অবস্থার সাথে ঘুমন্ত অবস্থার পার্থক্য হল এ সময় উত্তেজনায় সাড়া দেবার ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং শীতনিদ্রা বা কোমার চেয়ে সহজেই জাগ্রত অবস্থায় ফেরত আসা যায়। সকল স্তন্যপায়ী ও পাখি এবং বহু সরীসৃপ, উভচর এবং মাছের মধ্যে ঘুমানোর প্রক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। মানুষ ও অন্যান্য স্তন্যপায়ী এবং অন্য বেশ কিছু প্রানীর (যেমন কিছু প্রজাতির মাছ, পাখি, পিঁপড়া এবং ফ্রুটফ্লাই) অস্তিত্ব রক্ষার জন্যে নিয়মত ঘুম আবশ্যক।
ঘুমানোর কারণ সম্বন্ধে বিজ্ঞানীরা এখনো পুরোপুরি জানতে পারেননি এবং তা নিয়ে বর্তমানে গবেষণা চলছে। আর একটি ব্যপার। ঘুমন্ত মানুষের চেহারার কোন এক অজানা অতিরিক্ত আবেগ অনুভূতি কাজ করে। যা তার গোপন এক প্রাকৃতিক নিরাপত্তা দেয়।
তবে ঘুম শুধু শান্তি আর প্রশান্তি দেয় তা নয় যন্ত্রণা ও দেয় জীবন দুর্বিষহ করে, হয়তো পাঠক বলবেন? এ আবার কেমন কথা! ঘুম কী করে যন্ত্রণা দেয়? শুনুন তবে যারা বেশি বেশি রাত্রি জাগরিত থাকেন তারা শেষরাতে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন, আর সঠিক সময়ে উঠতে পারেন না, ঘুম ঘুম আমেজ নিয়ে নিয়মিত অফিসে যেতে হয় স্কুল, কলেজে যেতে হয়। সারাদিন খিটখিট লাগে মনের মধ্যে, প্রিয়জনের সুমধুর কথাও তেতো লাগে।
ঘুমের জন্য নিজের সাম্রাজ্যও হারাতে হয় উদাহরণ স্বরূপ ধরা যাক হিটলারের কথা ডি-ডে ডাউন ডে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে নর্মান্ডি উপকুল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়েছিলো মিত্রবাহিনীর সমরবিদদের কাছে। এখানে সৈন্য সমাবেশ ঘটাতে পারলে যুদ্ধজয় অনেকটা নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্ত বিষয়টা খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে, তবুও তারা ঝুঁকিটা নিলেন। তারা সৈন্য সমাবেশ শুরু করলেন ভোররাতের দিকে, যে সময়টা হিটলার গভীর ঘুমে থাকে।
সৈন্য সমাবেশ জার্মানি সৈনিকদের চোখে পড়লো, কিন্ত তারা কিছুই করতে পারছে না, কারণ হিটলার রাতে দেরিতে ঘুমাতে যেতেন দিনেও দেরি করে ঘুম থেকে উঠতেন, তাকে জাগাবে কার ঘাড়ে কয়টা মাথা।হিটলারের হুকুম ছাড়া একচুলও নড়বার শক্তি নেই কারো।
পরে মিত্রবাহিনী আক্রমণ করলে জার্মানি সৈন্যরা জোরালে পালটা আক্রমণ করতে পারলো না,জার্মানিদের পরাজয় শুরু হলো এখান থেকেই।
এখনো মিত্রবাহিনী ডি ডে-ডাউন ডে কে জয়ের স্মারক হিসাবে পালন করে।
ইশশ রে! দেরিতে ঘুম থেকে উঠার দায় শোধ করতে হলো নিজের সাম্রাজ্য আর জীবন দিয়ে।
তাইতো বলছি সঠিক সময়ে ঘুমাতে যান সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠুন।
আহ.. জীবনে শুধু শান্তি আর শান্তি। শুধু আপনাদেরকে বলছি না, নিজেকেও বলছি।
সাংবাদিক এইচ এম ফারুক, মতলব উত্তর, চাঁদপুর
Leave a Reply