মো. নাছির উদ্দীন : বিশ্বব্যাপী এরই মধ্যে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভয়ানক এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার হয়নি। পৃথিবীজুড়ে সবার মনে এখন একটিই প্রশ্ন- কবে আবিষ্কার হবে করোনার ওষুধ? বসে নেই বিশ্বের বিজ্ঞানীরাও। দিনরাত গবেষণা করছেন যাতে দ্রুত একটি প্রতিষেধক এনে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করা যায়।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা দেড় শতাধিক ওষুধের ওপর গবেষণা চালাচ্ছেন। তারা বারবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে চাইছেন, কোনো একটি ওষুধকেও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অব্যর্থ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যায় কি না। এ জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি বিশেষ প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। যার আনুষ্ঠানিক নাম দিয়েছে ‘সলিডারিটি ট্রায়াল’।
এর উদ্দেশ্য হলো- করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় চিকিৎসার উপায়গুলো পরীক্ষা করা।
তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা ‘রিকভারি ট্রায়াল’ নামে একটি পরীক্ষা চালাচ্ছে। এ পরীক্ষায় করোনাক্রান্ত পাঁচ হাজার রোগীকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে করোনাভাইরাসের ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে। বেশিরভাগ দেশে করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠা রোগীর রক্ত কীভাবে অন্য রোগীকে সুস্থ করতে ব্যবহার করা যায় এ নিয়ে গবেষণা করছে।
বিভিন্ন দেশের গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের ওষুধ আবিষ্কারে তিনটি লক্ষ্য নিয়ে তাদের আবিষ্কারের কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। প্রথমত, গবেষকরা চাচ্ছেন, করোনা প্রতিরোধে অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ আবিষ্কার করা যায় কি না। এ ওষুধ মানবদেহে করোনাভাইরাসের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দিতে সক্ষম হবে।
গবেষকরা আরেক ধরনের ওষুধ আবিষষ্কারের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সেটা হলো- করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর পরই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অশান্ত হয়ে উঠে। তখনই রোগী ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেমকে শান্ত রাখার ওষুধ আবিষ্কার করা যায় তাহলেও করোনা চিকিৎসায় সাফল্য আসবে বলে আশা করা যায়।
তৃতীয়ত, যে ওষুধটি বিজ্ঞানীরা আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন তা হলো, অ্যান্টিবডি তৈরি করা। সেরে উঠা রোগীর রক্ত থেকে এটা তৈরি হবে বা ল্যাবে এটা বানানো যাবে। অ্যান্টিবডি সরাসরি ভাইরাসকে আক্রমণ করে রোগীকে সুস্থ করে তুলবে
ইতিমধ্যে করোনা থেকে সেরে উঠা রোগীর রক্ত থেকে নেয়া চিকিৎসা পদ্ধতি প্লাজমা থেরাপিতে সফলতা পাওয়া যাচ্ছে।
Leave a Reply